শিপন মীরঃ
দেশে করোনায় সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ জেলা হিসেবে বারংবার নারায়ণগঞ্জ জেলার নাম উচ্চারিত হচ্ছে।আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় জেলাটিকে আইডিসিআর করোনার হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছে।ভাইরাসের সংক্রমণ হ্রাস পেতে সরকার থেকে সর্ব প্রথম এই জেলাকে গত ৮ই এপ্রিল লকডাউনের ঘোষনা দেওয়া হয়।
যা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।লকডাউন পরিস্থিতিতেই বর্তমানে জেলায় করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১০২৬ জন যেখানে মৃতের সংখ্যা ৪৮ জন ও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৭ জন।
ঘোষণা অনুযায়ী বর্তমানে জেলাটি লকডাউন থাকলেও কার্যত নেই বললেই চলে। অসেচতণ মানুষ ঘরে থাকতে অনীহা প্রকাশ করে সাধারণ জীবন যাপন করছে। এতে করে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ভয়াবহ ধারণ করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সচেতন মহল।
লকডাউনে মানুষকে সচেতন রাখতে নিয়মিতভাবে চলছে সশস্ত্রবাহিনী ও পুলিশের টহল।কিন্তু পাড়া মহল্লায় টহল প্রথম কয়েকদিন থাকলেও এখন তা স্বাভাবিক ভাবে চলছে ।কিছু কিছু এলাকায় পুলিশের টহল যতক্ষণ থাকে ঠিক ততক্ষণ সচেতন থাকে সাধারণ মানুষ।
শনিবার ২ মে করোনা ঝুঁকিতেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিজেএমই ও বিকেএমই’র অন্তর্ভুক্ত ২৩২টি শিল্প কারখানা চালু হয়েছে। জানা গেছে, অধিকাংশ শিল্প কারখানায় নির্ধারিত শ্রমিকের চেয়ে অধিক শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছে। যাদের মধ্যে অনেকেরই নেই স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সামাজিক দুরত্ব।
এদিকে জেলার অধিকাংশ এলাকায় কাঁচাবাজার ও ছোট পরিসরের মার্কেটগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য শহরের দিগুবাবুর বাজার যেখানে বাজার চলাকালীন সময়ে মানুষ দাঁড়ানোর ঠাই থাকেনা ।
বিভিন্ন এলাকায় সরকারের নির্ধারিত সময় অতিক্রম করে রাত ১০-১১টা পর্যন্ত খোলা থাকছে মুদি ও চায়ের দোকান।
সিদ্ধিরগঞ্জের কান্দাপাড়া এলাকায় এক চা দোকানীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, পুলিশের টহল নেই বললেই চলে মাঝে মধ্যে আসে, আবার কখনও আসেও না। বেশিরভাগ দোকান খোলা থাকে। তিনি আরও বলেন, এই এলাকার মানুষ করোনার আগে যেভাবে চলছে এখন আরও বেশি জনসমগম করে চলে।
শহরের চাষাড়া ও কালির বাজারের বিভিন্ন মার্কেট ও দোকান ইতিমধ্যে খুলতে শুরু করেছে । দোকান মালিকরা বলছেন, আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে জামা-কাপড় বিক্রির উদ্দেশ্যে দোকান চালু করেছেন। দীর্ঘদিন ঘরে বসে থাকায় ব্যবসায় লোকসান দেখা দিয়েছে। ঈদে ব্যবসা করে দোকান ভাড়া, পারিবারিক খরচ জোগানোর আশা করছেন তারা।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার জাহেদুল আলম জানান, আমাদের পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ৫০জনের মত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।পুলিশের টহল আগের তুলনায় কম হলেও আমাদের মোবাইল টিম নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, শিল্প কারখানাগুলো চালু হওয়ায় এবং করোনার চিকিৎসায় হাসপাতাল, ডাক্তার ও নার্সদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের কাজ করতে হচ্ছে এজন্যে অধিকাংশ পুলিশ সদস্য টহলে যেতে পারছে না।
তিনি আরও জানান, লকডাউনে যারা সরকারি নিয়ম ভেঙ্গে দোকান চালু রাখছে তাদের ব্যাপারে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সেই সাথে সকলকে ঘরে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম ।